তলপেটে ব্যথা প্রতিটা মেয়ে বা মহিলাদের একটি কমন সমস্যা। তবে সব মেয়েদের এ সমস্যা হয় না। বেশিরভাগ মেয়েরা এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। কারণ আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম যন্ত্রাংশ রয়েছে। এর কোনো একটিতে যদি কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আমাদের পেটে ব্যথা হয়ে থাকে। তাই তলপেটে ব্যথা হলে কখনো চুপ করে ঘরে বসে থাকা উচিত নয়। একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অতি জরুরি।
মেয়েদের তলপেটে ব্যথা হওয়ার কারণ ২০২২ |
জানরে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবো পেটে ব্যথা কেন হয়, মেয়েদের পেটে ব্যথার কারণ, এবং পেটে ব্যথার সমস্যার সমাধান। তাই মনোযোগ সহকার পড়ুন।
তলপেটে ব্যথা করার কিছু কারণ:
★ মাসিক:
মেয়েদের প্রাকৃতিক ডাক অর্থাৎ মাসিক হলে পেটে ব্যথা হবে এটাই একটি স্বাভাবিক বিষয়। তবে দু একজনের ক্ষেত্রে এই ব্যথাটি অনেক জটিল সমস্যার ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। জরায়ুতে টিউমার থাকলে মেয়েদের তলপেটে ব্যথা বেশি অনুভব হয়। এছাড়া ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার সময় কারও কারও প্রচুর পরিমাণে অসহ্য ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে।
★ প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করা:
মেয়েদের প্রস্রাবের সংক্রমণ খুবই কম হয়ে থাকে। এই সমস্যার জন্য তলপেটে ব্যথা হতে পারে। তলপেটে ব্যথার পাশাপাশি প্রস্রাবে জ্বালা, প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব হওয়া, জ্বর জ্বর ভাব ইত্যাদি সমস্যার দেখা যেতে পারে।
★ জরায়ু ও আশপাশে সংক্রমণ হলে:
মেয়েদের জরায়ু ও তার পাশে যেকোনো ধরনের সংক্রমণ হলে তাকে পেলভিক ইনফ্লামাটরি ডিজিজ বলা হয়। এ সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা, জ্বর জ্বর ভাব থাকে এবং প্রস্রাব নির্গত হয়। অনেক সময় এই ধরনের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
★ অ্যাপেনডিসাইটিসের ব্যথা:
অ্যাপেনডিসাইটিসের ব্যথা প্রথমে শুরু হয় নাভির চার দিকে, তারপর তা স্থায়ী হয় তলপেটের ডান দিকে। সঙ্গে বমিও হতে পারে।
★ ডিম্বনালিতে ভ্রূণ স্থাপিত হওয়া:
কিছু কিছু সময় মেয়েদের জরায়ুতে ভ্রণ স্থাপিত হয়। ডিম্বনালিতে ভ্রণ স্থাপিত হয়ে থাকে। এর ফলে ডিম্বনালি ফেটে যেতে পারে। এটি একটি গুরুতর সমস্যা। এর ফলে পেটে প্রচন্ড ব্যথার পাশাপাশি তলপেটে রক্তক্ষরণ হতে পারে। ফোনে একজন নারী রক্ত শূন্যতায় ভুগবে।
★ বৃক্কে পাথর:
তলপেটের দুই পাশে বৃ্ক্ক থাকে। তাই বৃক্কে পাথর হলে তলপেটে ব্যথা হবে এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। এছাড়া এই একই রোগের জন্য পিঠের নিচের দিকে ব্যথা হতে পারে।
পেটব্যথা কমানোর জন্য কিছু উপকারী খাদ্য:
★ আদা:
সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ পেটে ব্যথা কমানোর জন্য আবার ব্যবহার করে আসছে। আপনি চায়ের সাথে আদায় করতে পারেন অথবা চিবিয়ে খেতে পারেন। বিশেষ গুণাগুণ থাকায় আদা পেটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
★ কলা ও আপেল:
কলা এবং আপেল একটি ফাইবার জাতীয় খাবার। এই ফলগুলো পেটে ব্যথা কমাতে প্রচুর সাহায্য করে। পাশাপাশি ডায়রিয়া প্রতিরোধেও কলা এবং আপেলের গুরুত্ব অপরিসীম।
★ টোস্ট:
টোস্ট বা বিস্কুট জাতীয় খাদ্যে তেলের পরিমাণ খুবই কম থাকে। তাই এই খাবারগুলো পেটে ব্যথা কমাতে প্রচুর সাহায্য করে। এর পাশাপাশি বমি বমি ভাব দূর করতেও টোস্ট বা বিস্কুট জাতীয় খাবারের জুড়ি নেই।
★ পুদিনা পাতা:
কৃত্রিম উপাদান থেকে ঔষধি কাজের জন্য প্রাকৃতিক উপাদান গুলো বেশি কার্যকরী। বহুকাল ধরে পেটে ব্যথা কমানোর জন্য পুদিনা পাতা প্রচুর ব্যবহার করা হয়। পুদিনা পাতা পেট ঠান্ডা রাখতে প্রচুর সাহায্য করে ফলে পেটে ব্যাথা কম হয়।
★ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার:
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে অ্যাসিড স্টার্চ থাকে। অ্যাসিড স্টার্চ ব্যাকটেরিয়া দমনে সহায়তা করে। ফলে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার পেটে ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
তলপেটে ব্যথা হলে করণীয়:
বিশেষ করে মেয়েদের যদি তলপেটে ব্যথা অনুভব হয় তাহলে মোটেও অবহেলা করা উচিত নয়। হয়তো সামান্য অবহেলার জন্য অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। প্রথমত উপরের পরামর্শ গুলো মানতে পারেন। তবে যদি ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। সবসময়ের জন্য মূত্রথলি খালি রাখবেন।
তলপেট ব্যথার ট্যাবলেট বা ওষুধের নাম:
বিশেষ করে মহিলাদের মাসিকের সময় প্রচণ্ড তলপেট ব্যথা হলে HPR-DS Tablet-টি (500 mg) এই ওষুধটি খেতে পারেন। এই ওষুধের ফলে প্রচুর গ্যাস হতে পারে। তাই গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়ার জরুরী।
আশা করি উপরিউক্ত নির্দেশনা গুলো মেনে চললে পেটে ব্যথা সহজেই দূর হয়ে যাবে।